ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৯/০৪/২০২৪ ৯:৫৬ এএম

গভীর সমুদ্রপথে মানব পাচার থামছে না। কক্সবাজারে মানব পাচারকারীদের দৌরাত্ম দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় রোহিঙ্গাসহ স্থানীয়দের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। এরই মধ্যে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িতদের তালিকা করেছে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা। তালিকায় ৩০ জন রোহিঙ্গা ও ৩০ জন স্থানীয় বাসিন্দার নাম পেয়েছে গোয়েন্দা সূত্র।

তদন্তে উঠে এসেছে মানব পাচারের ভয়ংকর তথ্য। পাচারকারীরা ভুক্তভোগীদের উন্নত জীবনযাপনের আকাশছোঁয়া স্বপ্ন দেখিয়ে সাগরপথে নিয়ে যাওয়ার পর অনেকে ফিরেছেন লাশ হয়ে।পাচারকারী ৬০ জনের ৩০ জনই রোহিঙ্গা সদস্য। আর ভুক্তভোগীদের মধ্যে মিয়ানমারের বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গা সদস্যদের সংখ্যাই বেশি।

স্থানীয়দের মধ্যে বাংলাদেশি এই চক্রের অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ হোসাইন ওরফে ডাকাত হোসাইন ওরফে দালাল। চক্রের ৬০ জনই মানব পাচারের সিন্ডিকেট বিদেশি নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোহিঙ্গাসহ বাংলাদেশি মানব পাচারকারী চক্রটি মিয়ানমারের নৌবাহিনী ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সংশ্লিষ্টতায় এবং সেখানকার দালাল চক্রের মাধ্যমে নৌপথে প্রথমে থাইল্যান্ড বা ইন্দোনেশিয়া নিয়ে যায়। সেখানে বিমানযোগে বৈধভাবে অন্যান্য দেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আদায় করে লাখ লাখ টাকা। এরপর সেখানে বিদেশ যেতে ইচ্ছুকদের জিম্মি করা হয়।

আকাশপথে নেওয়ার কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত তাদের ট্রলারে করে থাইল্যান্ড থেকে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর পাচার করে সেখানকার দালালদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। যাদের জিম্মি করা হয় তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থের মুক্তিপণ নিয়ে সাগরপথে আশপাশের দেশগুলোতে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১৯ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত ১৯টি মানব পাচারের মামলা হয়। মামলাগুলোর বিচারিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

যে কৌশলে পাচার হয়ে থাকে : তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা ট্রলার ও কার্গোতে আমদানিকৃত পণ্যসামগ্রী খালাসের পর রফতানিযোগ্য পণ্যের জন্য ট্রলার ও কার্গো নাফ নদীর জাইলার দ্বীপে নোঙ্গর করে থাকে। মাদক চোরাচালান ও মানব পাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত রোহিঙ্গারা নাফ নদীর জাইল্লার দ্বীপে নোঙ্গরকৃত ট্রলার ও কার্গোর পরিচালকের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে চুক্তি করে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার জন্য রোহিঙ্গাদের রাতে ছোট ডিঙ্গি নৌকায় করে মিয়ানমারের ট্রলার বা কার্গোতে তুলে দেয়।

গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে তথ্য উঠে এসেছে, তৎকালীন রোহিঙ্গা শরণার্থী পাচারের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতার হওয়ার পর ২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত রোহিঙ্গারা সাগরপথে ট্রলারযোগে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত তাদের আত্মীয়দের কাছে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন।

উল্লেখ্য, আশ্রয় শিবিরের জনবসতিপূর্ণ এলাকায় কর্মহীন অবস্থায় বসবাস করায় এবং মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন প্রলম্বিত হওয়ায় আত্মস্বীকৃতি ও কাজের সন্ধান করতে গিয়ে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে। এভাবে কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়ায় সাগরপথে যাওয়া স্বল্পসংখ্যক রোহিঙ্গা স্বজনদের কাছে পৌঁছাতে পারলেও এদের অনেকেই সমুদ্রে ট্রলারডুবিতে মারা যান। আবার কেউ কেউ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার ও উদ্ধারও হন। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে উন্নত জীবনযাপনের আশায় বিদেশে অবৈধভাবে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের একটি অংশ বিভিন্ন উপায়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট সংগ্রহ করে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছে। আরেকটি অংশ অবৈধভাবে সমুদ্রপথে বিদেশ গিয়ে কাজের পাশাপাশি বাংলাদেশি পরিচয়ে অবৈধভাবে বসবাস এবং পাসপোর্ট সংগ্রহের চেষ্টা করে থাকে। রোহিঙ্গাদের এমন কার্যকলাপের কারণে সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের শ্রম বাজারের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা বিগত সময়ে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া হয়ে ইন্দোনেশিয়া এবং সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন। বিদেশে চাকরিপ্রত্যাশী যারা যাচ্ছেন সেসব রোহিঙ্গা দালালদের মাথাপিছু আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা দিয়ে থাকেন। আর টাকা দিয়েও প্রতারণার শিকার হয়েছেন অনেকে।

কারাভোগ শেষে ফিরে এলেন ১৭৩ জন : প্রায় আড়াই বছর মানব পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে মিয়ানমারের নৌবাহিনী ও বিজিপির কাছে আটক হয়ে কারাভোগের পর গত বুধবার ১৭৩ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে দিয়েছে মিয়ানমার সরকার। ১৭৩ জনের মধ্যে ১২৯ জনই কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন থানার, ৩০ জন বান্দরবান জেলার, সাতজন রাঙ্গামাটি জেলার, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার একজন করে। তবে পুলিশের ভাষ্য, এই ১৭৩ জন শুধু মানব পাচারকারীদের কাছেই নয় বিভিন্ন কারণে তারা ওই দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করেছেন।
গত বুধবার ১৭৩ জনের মধ্যে কারাভোগের পর দেশে ফিরে আসেন টেকনাফ সদরের রাজারছড়া এলাকার মোস্তাক আহমেদের ছেলে নোমানসহ আরও ৫০ জন। তারা মিয়ানমারের নৌবাহিনীর হাতে আটক হয়েছিলেন আড়াই বছর আগে। তারা সমুদ্রপথে ট্রলার করে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টাকালে সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে আটক হয়েছিলেন।

ওই ট্রলারে দেশের বিভিন্ন স্থানের আরও ৪৯ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের বহনকারী ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান অবস্থায় ছিল। চার থেকে পাঁচ দিন সাগরে ভাসমান থাকার পর মিয়ানমারের নৌবাহিনী তাদের আটক করে পরে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে সে দেশের কারাগারে পাঠায়। প্রায় আড়াই বছর (৩০ মাস) কারাভোগের পর বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রচেষ্টায় গত ২৪ এপ্রিল স্বদেশে ফেরত আসেন নোমান।

নোমান জানান, উন্নত মানের চাকরির আশায় উনছিপ্রাং এলাকার হোসাইন দালালের প্রলোভনে পড়ে তিনিসহ রামু ও মহেশখালীসহ আরও বিভিন্ন এলাকার ৪৯ জন মালয়েশিয়া যেতে চেয়েছিলেন। তাদের আটক করার পর প্রতিদিন এক বেলা খাবার দেওয়া হতো। কারাগারে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের পাশাপাশি অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ধারণা করা হয়েছিল, কখনো আর ফেরা হবে না দেশে। নোমান বলেন, কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় দেশে ফিরতে সক্ষম হয়েছি।

একইভাবে নোমানের মতো হোসাইন দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন হোয়াইক্ষ্যং এলাকার বাসিন্দা রশিদ আহমদ। কক্সবাজারে বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে দুই ছেলের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, আমার দুই ছেলে মুক্তার আহমেদ ও আল মামুনকে অল্প টাকায় মালয়েশিয়া নেওয়ার কথা বলে হোসাইন দালাল টেকনাফের বাহারছড়ার জাহাজপুরা এলাকা থেকে বোটে তুলে দেন। বোটে কয়েক দিন থাকার পর মিয়ানমার সীমান্তে নামিয়ে দেয়। পরে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি তাদের আটক করে। হোসাইন দালাল মালয়েশিয়া পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে দুই লাখ টাকা নেন। ছেলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখান। পরে দুই ছেলে মিয়ানমার থেকে কল করে জানায়, তারা কারাগারে আছে। ছেলেদের আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। তাদের আবার ফিরে পাব-তা কল্পনাই করিনি। হোসাইন দালালের ঘরে বেশ কয়েকবার গেলেও উল্টো আমাকে হুমকি দিয়ে তিনি বের করে দিয়েছিলেন। তিনি অনেক প্রভাবশালী। তার এক ভাগনে নাকি মন্ত্রীর সচিব।

শুধু নোমান বা মোস্তাক আহমেদই নন-তাদের মতো আরও শতজন হোসাইন দালালের কাছে প্রতারণার শিকার হয়েছে। বাংলাদেশে ফেরত আসা ১৭৩ জনের বেশিরভাগই মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে মিয়ানমারে আটক হন। ১৭৩ জনের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজার জেলার। ফেরত আসা বাংলাদেশি বেশিরভাগ নাগরিক তাদের এই ভয়াবহ দুর্ভোগের জন্য টেকনাফ-হোয়াইক্ষং-উনছিপ্রাং এলাকার হোসাইন দালালকে দায়ী করেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথমে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার জন্য মিয়ানমার অংশ অতিক্রমে সেখানকার সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সামরিক বাহিনী অর্থের বিনিময়ে সহায়তা করে থাকে পাচারকারীদের। টেকনাফ ও উখিয়ায় বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অনেক রোহিঙ্গা মানব পাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে অর্থ উপার্জন করছে। এ ক্ষেত্রে টেকনাফের স্থলবন্দর, শ্যামলাপুর, শাহপরীর দ্বীপ এবং নাইক্ষ্যংছড়ির তমক শূন্য রেখায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। টেকনাফ স্থলবন্দরে দৈনিকভিত্তিতে পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজে নিয়োজিত সহস্রাধিক শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ শ্রমিক ক্যাম্প-২৪, ২৫, ২৬ ও নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের রোহিঙ্গা যারা এসব রুটে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত।

২০২০ সালে ১০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ৮টার দিকে টেকনাফের সমুদ্র উপকূলবর্তী নোয়াখালী পাড়া গ্রামের নৌকাঘাট থেকে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১৩৮ জন রোহিঙ্গা ট্রলারে করে অবৈধভাবে সাগরপথে দালালের সহায়তায় মালয়েশিয়া পাড়ি দেওয়ার পর দিন ভোর ৫টার দিকে সেন্টমার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপ থেকে ১০ নটিক্যাল দক্ষিণ-পশ্চিম গভীর বঙ্গোপসাগরে অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে ট্রলারটি ডুবে যায়।

ওইদিন সকাল ৬টায় সেন্টমার্টিন কোস্ট গার্ড স্টেশন কর্তৃপক্ষ সংবাদ পেয়ে ৬টা ২৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৭২ জনকে জীবিত উদ্ধার করে। তার মধ্যে ৪৯ জন নারী, ১৯ জন পুরুষ এবং ৪ জন শিশু রয়েছে। এ ছাড়াও ১৫ জনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে ১২ জনই নারী ও ৩ জন শিশু। এ ছাড়াও ৫১ জন রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছে বলে কোস্ট গার্ড কর্তৃপক্ষ ওই সময় জানায়। উদ্ধারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত ৭ বাংলাদেশি এবং ১ রোহিঙ্গা দালালকে আটক ও নোয়াখালী পাড়া থেকে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু আরও ৪১ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে তথ্যানুসন্ধানে সাগরপথে রোহিঙ্গা শরণার্থী পাচারের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের ৬০ জনের নামের তালিকা বেরিয়ে আসে। তার মধ্যে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদেরও মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে।

রোহিঙ্গা সিন্ডিকেট যারা : মানব পাচারকারী সিন্ডিকেটের রোহিঙ্গা দালালরা হলেন-ক্যাম্প-২৬-এর এইচ ব্লকের লাল আমিরের ছেলে হাবিবুল্লাহ, ক্যাম্প-৯-এর এইচ ব্লকের বালুখালী মসজিদের ইমাম মো. গফুর মিয়া, ক্যাম্প-২৩ শামলাপুর বাহারছড়া ক্যাম্প-২৩-এর ব্লক-এ/৩-এর নুরুল আলমের ছেলে মো. আলম, ব্লক-এ/৪-এর বশির আহমেদের ছেলে ইমাম হোসেন, ব্লক-কে/১-এর ফজল আহমেদের ছেলে আমান উল্লাহ, ব্লক-সি/৪ আবুল কাশেমের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম, ব্লক-সি/১৬ আবু বকরের ছেলে ইসলাম মিয়া, ব্লক-ডি/২-এর নজির আহমেদের ছেলে আতাউল্লাহ, ব্লক-বি, এফসিএন-৪০২২৯৭-এর খালেকের ছেলে আলী জহর, ক্যাম্প-২৪ ব্লক-এ আলী হোসেনের ছেলে দীল মোহাম্মদ, ব্লক-ডি/২ বাসা নং ১০৮-এর ওলামিয়ার ছেলে মৌলভী আবদুর রহিম, ব্লক-সি ওবায়দুল্লাহর ছেলে মো. আবদুল্লাহ, ব্লক-এফ ৪-এর মো. সুলতানের ছেলে মাঝি মো. কামাল হোসেন, ক্যাম্প-১৭ ব্লক-এ/৭-এর জাহিদ হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ আলী, সোনা আলীর ছেলে মো. জমিল, ক্যাম্প-২৬ নয়াপাড়া মোছনী ব্লক-এফের হাসিম উল্যা, ব্লক-এফের হাসিম উল্যার ছেলে সৈয়দ, ক্যাম্প-১৩ ব্লক-বি/২৬ মো. শফির ছেলে মো. জাহিদ আলম, ক্যাম্প-১৩ হাকিমপাড়া ব্লক-১০-এর নুরুল আমিনের ছেলে আবুল আমিন, ক্যাম্প-১৫, জামতলীর ব্লক-এইচ/১৪ নজির আহম্মদের ছেলে এনায়েত উল্লাহ, ব্লক-এ/৩ এর হাসিমের ছেলে মো. ইসলাম, ব্লক-ই/৫-এর সোনা মিয়ার ছেলে মো. আবুল মোনাফ, ব্লক-এইচ/১৩ ইসলামের ছেলে ফারুক শাহ, ক্যাম্প-২৬ ব্লক-শালবন আমিনের ছেলে মৌলভী করিম, ক্যাম্প-১০ বালুখালী ব্লক-বি/৬৪ কবির হোসেনের ছেলে মো. ওসমান, ক্যাম্প-৫ কুতুপালং ব্লক-এফ/২ আবদুল্লাহর ছেলে আমান উল্লাহ, ব্লক-বি-২৬ মো. শফিকের ছেলে মো. জাহেদ আলম, ক্যাম্প-১৪ ব্লক-বি/২ লালুর ছেলে হাকিম শরীফ, ব্লক-জি/৭ জকির আহমেদের ছেলে সৈয়দুল ইসলাম এবং একই ব্লকের কামাল হোসেনের ছেলে মোস্তাক আহম্মদ।

বাংলাদেশি সিন্ডিকেটে যারা জড়িত : নোয়াখালী পাড়ার আবদুল আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম, একই গ্রামের হাকিম আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম, টেকনাফের সাবরাংয়ের মো. ছলিমের স্ত্রী আছমা বেগম, একই এলাকার মৃত আবদুল্লাহর ছেলে সিরাজুল ইসলাম, টেকনাফের ডেইলপাড়ার জাকির আহমেদের মেয়ে দিলারা বেগম, একই এলাকার মৃত ওসমানের ছেলে মমিনুল ইসলাম, টেকনাফের শ্যামলাপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড বাসিন্দা আবদুর রশিদের ছেলে নুরুল ইসলাম, কোনারপাড়া ৮ নং ওয়ার্ডের নুর মোহাম্মদের ছেলে জামাল উদ্দিন, সেন্টমার্টিনের মৃত ফজল আহম্মদের ছেলে বদি আলম, সেন্টমার্টিনের পূর্বপাড়ার আলী আহমেদের ছেলে কবির মাঝি, টেকনাফের নয়াপাড়া, রঙ্গিখালীর জহির আহম্মদের ছেলের মো. রফিক, একই এলাকার মৃত সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মো. শফিক, ৮ নং ওয়ার্ডের কচ্ছপিয়া করাচিপাড়া গ্রামের হোসাইন আলীর ছেলে মো. জাফর, জুম্মাপাড়ার মৃত হাকিম আলীর ছেলে আ. সালাম, বাঘগোনার ইসলাম মিয়ার ছেলে মো. আইয়ূব, মিঠা পানিরছড়ার বশির আহম্মেদের ছেলে মো. ইউনুছ প্রকাশ ওরফে ইউনুছ মাঝি, হাবির ছড়া গ্রামের মো. শফিকের ছেলে মো. সালাম, কোনাপাড়া নোয়াপাড়ার মো. শফিকের ছেলে মো. হোসাইন, বাহারছড়ার হাসান আলীর ছেলে সৈয়দ আলম, একই গ্রামের আবদুল সালামের ছেলে মো. আজিজ, উলা মিয়ার ছেলে ফয়েজ আহম্মদ, জুম্মাপাড়ার আজমের ছেলে সাদ্দাম হোসেন, রাজারছড়া মোস্তাক আহম্মদের ছেলে হুমায়ূন কবির, রামুর শিকদারপাড়ার রশিদ নগরের মৃত ইউনুসের ছেলে শওকত আকবর, একই এলাকার ছব্বির আহমেদের ছেলে মো. মোবারক, মহেশখালীর কুতুবজুম বটতলী গ্রামের জাকারিয়ার ছেলে মো. আলম, একই গ্রামের আমিন শরিফ, আজিজুল হকের ছেলে আবদুল খালেক, মোস্তাক আহমেদের ছেলে মহি উদ্দিন।

যা বললেন কক্সবাজারের এসপি : কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজুল ইসলাম সময়ের আলোকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গারা সাগরপথে মানব পাচারকারীদের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার সময় পুলিশ তাদের আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। সম্প্রতি আমরা পাচারকারীদের তালিকা করেছি। মানব পাচারকারীদের অনেকেই গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করছেন। তিনি বলেন, এই সিন্ডিকেট তিনভাবে পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত। একটি স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে, আরেকটি রোহিঙ্গা দালাল ও বাংলাদেশিদের সঙ্গে রোহিঙ্গারাও এ কাজে যুক্ত। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় রোহিঙ্গাসহ মানব পাচার আগের চেয়ে অনেক কমেছে। যারা এখনও পাচার কাজে জড়িত তাদের বিষয়েও পুলিশ খোঁজখবর নিচ্ছে এবং অভিযান চালাচ্ছে।

গত বুধবার মিয়ানমার নৌবাহিনী ও বিজিপির হাতে ১৭৩ জন বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা আটকের পর কারাভোগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবাই কিন্তু দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য মিয়ানমারে গ্রেফতার হয়নি। অনেকে বিভিন্ন কারণে সীমান্ত অতিক্রম করার কারণে গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করেন। তিনি বলেন, আমরা প্রায়ই পাচারকারীদের গ্রেফতার করছি। পুলিশ এ বিষয়ে সজাগ রয়েছে।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের সাথে মাদক ব্যবসা তালিকায় কক্সবাজারের ১১৫১ কারবারির নাম

মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের সুযোগে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে মাদক পাচার বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো নিজেদের ...